বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
ময়মনসিংহের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন টক অব দ্যা ডিস্ট্রিক -ছাত্রলীগ। কারা আসছে আগামী ছাত্রলীগের নেতৃত্বে? রাজপথ থেকে না পকেট থেকে? এবারও হবে কি পূর্ণাঙ্গ কমিটি? না আবারও ৪ নেতা বিশিষ্ট ছাত্রলীগ পাবে ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগ। চলছে সমীকরণ। আলোচনা-সমালোচনা। তৈরি হয়েছে নেতৃত্ব হাসিলের প্রতিযোগিতা। নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের কর্মকান্ড। জেলা বা কেন্দ্রের কোন নির্দেশনার তোয়াক্কা না করেই যে যার মতো ইচ্ছে মাফিক শোডাউনে ব্যস্ত। এক্ষেত্রে মাইম্যান প্রার্থীর কার্যক্রমে গা ভাসিয়েছেন অনেক জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, এমপি মন্ত্রীরাও। প্রশ্ন উঠেছে, এ দায় কাদের জেলার না কেন্দ্রের?
এবিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ রকিবুল ইসলাম রকিবকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা, এমনকি এমপি মন্ত্রীর ছত্রছায়ায় থেকে অনেকেই ছাত্রলীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ইচ্ছে মাফিক শোডাউন করছে। তারা অনুপ্রবেশকারী। তারা ছাত্রলীগের আইন কানুন মানবে না এটাই স্বাভাবিক।
তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে আমরা অবহিত করতে পারি। তবে অনুপ্রবেশকারীরা স্বঘোষিত নেতা। তারা কখনই সাংগঠনিক নিয়ম নীতির ধার দারে না। তাদের সাথে জেলা ছাত্রলীগের কখনই যোগাযোগ ছিলো না।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিব বলেন, দেশরত্ম শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগের ব্যাপক কর্মসূচী ছিলো। চার থেকে পাচ হাজার নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে শুভেচ্ছা ও আনন্দ মিছিল করার প্রস্তুতি ছিলো। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশনা অনুযায়ী ময়মনসিংহ ছাত্রলীগ তা আগের দিন বাতিল করে কেন্দ্রের দেয়া কর্মসূচী বৃক্ষরোপণ মিলাদ মাহফিল করেছি। “এর ব্যত্যয় যারা ঘটিয়েছে তারা বিশৃঙ্খলাকারী বেয়াদব।”
সাধারণ সম্পাদক সরকার মোঃ সব্যসাচী বলেন, ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্ব কেন্দ্র কর্তৃক প্রদত্ত যা এখনও চলমান। সংগঠনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে জেলা ছাত্রলীগ। তবে যারা সংগঠনের পরিচয় দিয়ে শোডাউন দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে দেখাতে, পক্ষান্তরে তারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। কারণ তারা ছাত্রলীগের নয় মাইম্যান নেতার নির্দেশনায় কার্যক্রম করে থাকে। তাদের পেছনে সিনিয়রদের উসকানি রয়েছে।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিন উদযাপন করেছে ময়মনসিংহ ছাত্রলীগ। তবে এর বাইরে ইচ্ছে মাফিক যারা শোআপের প্রোগ্রাম করেছে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবহিত করা হয়েছে। এবং তাদের সহযোগী থানা ইউনিট সম্পর্কেও অবগত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
এবিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
গুঞ্জন রয়েছে রাজপথে বর্তমান নেতৃত্বের পাশে থাকা কর্মীরা আবারও ছিটকে পড়তে পারেন ক্ষমতার হাত ধরে ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশ করা হঠাৎ নেতার দাপটে। যাদের অনেকরই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগদানের বয়স দুই বছরও হয়নি। তারাও পদবী হাসিলে মরিয়া হয়ে উঠেছে মাঠে থাকা নিবেদিত কর্মীদের লাল কার্ড দেখিয়ে। তাদের পেছনে কাজ করছে জেলার সিনিয়র নেতারা। প্রশ্ন উঠেছে এসব পকেট নেতা আগামীতে ছাত্রলীগের পদে আসলে তারা ছাত্রলীগের নির্দেশনার প্রতি কতটা আস্থাশীল থাকবে?।
সবশেষ ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি হয়েছিলো তাজ রানা ও আক্তারুজ্জামান রবিনের কমিটি। ২০১৪ থেকে ২০২০ আরও দুটি কমিটি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করলেও অসংখ্য কর্মীরা নেতৃত্বের সাধ পায়নি। বয়সের সমীকরণে ঝড়ে পড়েছে অবেলায়।
অন্যদিকে এসময়কালে ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের ৪ নেতৃত্ব জসিম, রকিব-রকিব, সাচীর ডাকে রাজপথে সাংগঠনিক নির্দেশনা পালন করেছে নিবেদিত মাঠ কর্মীরা। যাদের অনেকেই আজ নেতা হবার স্বপ্ন বুকে ধারণ করে চেয়ে আছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও ছাত্রলীগের আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকে।
আশাহত এসব কর্মীরা যখন দেখেছে নেতা হবার সব দ্বারাই রুদ্ধ হয়ে আসছে। হঠাৎ নেতার দাপটে মাঠের হাওয়া বইছে ক্ষমতার প্রতিকুলে। তখন তাদের একমাত্র ভরসার স্থানটি জননেত্রী শেখ হাসিনা। তারা আশাবাদী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনায়- “মাঠের কর্মীরা বাদ না পড়বে না”। ছাত্রত্বের হাতেই থাকবে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। ছাত্রদল বা অন্য দলের ম্যানডেট নিয়ে আসারা ঠাই পাবে না ছাত্রলীগের সংগঠনে।
ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের কমিটি হচ্ছে, হবে আওয়াজে সম্প্রতি অনেক নতুন মুখের উপস্থিতিতে সরব ক্ষমতাবান নেতাকুল। তাদের ডানে বায়ে শ্লোগানে সোভা পাচ্ছে এসব নেতারাজী। তবে ময়মনসিংহে শীর্ষ রাজনৈতিক ধারায় পালাবদলের সমীকরণে নেতাকেন্দ্রিক ছাত্রলীগ নেতার অবস্থানও দেখা গেছে পাশ্ব কর্মসূচীতে। তাদের অবস্থান সরব থেকেছে পছন্দের নেতাকে কেন্দ্র করে। নেতা চাইলেই শত শত কর্মীর সরবরাহ ঘটেছে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামকে কেন্দ্র করে। তাদের অবস্থান, কর্মপন্থা চলেছে অর্পিত নেতার বিপরীতে। যেন ঘরের ভিতরে ঘর, রাজনীতির ভিতরে মনজয়ী রাজনীতি।
সংশোধিত; ছবির গ্রাফিক সংশোধন করা হয়েছে।